ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে একটি রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জন


ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে একটি রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জনে।ইউক্রেনীয়রা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শহর ছাড়ার সময় শুক্রবার (৮ এপ্রিল) এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি করছে দেশটি।ওই এলাকা থেকে সরে যেতে তারা ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছিলেন।

রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলা

দেশটির পূর্বাঞ্চলে এখনো চালু থাকা স্টেশনগুলোর মধ্যে একটি ক্রামাতোরস্ক স্টেশন। দোনেৎস্কের গভর্নর বলেন, হামলার সময় চার হাজার মানুষ সেখানে ছিলেন। ওই এলাকা থেকে সরে যেতে তারা ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছিলেন।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশ থেকে সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও বেশ সাড়া ফেলেছে। ওই ভিডিওতে সামরিক বাহিনীর পোশাক পরা একজনকে গুলি করে হত্যা করতে দেখা গেছে। ভিডিওটি তাঁর নজরে এসেছে। বিষয়টি 'অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।'রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহগুলোর আশপাশে থাকা সামরিক পোশাক পরা ব্যক্তির অনেকের হাতে নীল রঙের ব্যান্ড দেখা গেছে। সাধারণত ইউক্রেনের সেনা সদস্যরা এই ব্যান্ড পরেন। এ ছাড়া এসব ব্যক্তিকে রুশ ভাষায় কথা বলতে দেখা গেছে। ইউক্রেনে রুশ ভাষার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই ব্যক্তি ইউক্রেন বাহিনীর হাতে বন্দী হওয়া রুশ সেনা। ভিডিওটি নিয়ে বিবিসির বিশ্লেষণেও ইউক্রেনের সেনা সদস্যদের হাতে রুশ সেনা নিহতের তথ্য এসেছে। এ বিষয়ে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেছেন, ভিডিওটি তাঁর নজরে এসেছে। বিষয়টি 'অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।'রাস্তায় পড়ে থাকা মরদেহগুলোর আশপাশে থাকা সামরিক পোশাক পরা ব্যক্তির অনেকের হাতে নীল রঙের ব্যান্ড দেখা গেছে। সাধারণত ইউক্রেনের সেনা সদস্যরা এই ব্যান্ড পরেন। এ ছাড়া এসব ব্যক্তিকে রুশ ভাষায় কথা বলতে দেখা গেছে। ইউক্রেনে রুশ ভাষার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।

রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলায় ৫০ জন নিহত

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলো বিবিসির এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করে বলেছেন, বেসামরিক লোকদের টার্গেট করে এ হামলা চালানো হয়েছে। রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিও জানান তিনি।

কিয়েভে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল ও ইইউ-র নির্বাহী প্রধান উরসুলা ভন দের লিয়েন নিন্দা জানিয়েছেন এই ভয়াবহ হামলার।ভিডিওটির মাঝামাঝি সময়ে দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তির চেহারা পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। পরে আরও কয়েকজনের চেহারাও ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এসব ব্যক্তির চেহারা বায়োমেট্রিক তথ্যভান্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে বিবিসি। একজনের চেহারার সঙ্গে জর্জিয়ার এক ব্যক্তির মিল পাওয়া গেছে। ইউক্রেনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সংযোগ পাওয়া গেছে। তবে পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি।

ভিডিও করার সময় ক্যামেরা দাড়িওয়ালা ব্যক্তির দিকে ঘোরালে একজনকে চিত্কার করে বলতে শোনা যায়, 'ইউক্রেনের গৌরব'। জবাবে দাড়িওয়ালা ওই ব্যক্তি বলেন, 'বীরদের গৌরব'। সবশেষে ভিডিওতে একজন বলেন, 'আমাদের দেশে পা দিও না'।

তবে এ হামলার দায় অস্বীকার করছে ক্রেমলিন।বিবিসির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পশ্চিমে দমিত্রিভকা শহরের বাইরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে। সড়কটি দমিত্রিভকা শহরকে ইরপিন ও বুচা শহরের সঙ্গে যুক্ত করেছে

ভিডিওতে ঘটনাস্থলের যেসব চিত্র দেখা গেছে, তা গুগল ম্যাপের স্ট্রিট ভিউয়ে দেখানো চিত্রের সঙ্গে মিলে যায়। গত ৩১ মার্চ স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ওই এলাকার ছবিতে মাটিতে রক্ত ধারা দেখা গেছে। স্যাটেলাইটের ছবিতে একটি সাঁজোয়াযানও ধরা পড়ে। ভিডিওতেও একই সাঁজোয়া যান দেখা গেছে।

ধীরে ধীরে রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয় রুশ সেনারা

এর আগে ইউক্রেনের কিয়েভের কাছে বুচা শহরে চারশোটির বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানায় ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ।ভিডিওতে দেখা যায়, সামরিক পোশাক পরা চার ব্যক্তি রাস্তার ওপর পড়ে আছেন। তাঁদের তিনজন কোনো রকম নড়াচড়া করছিলেন না। বাকি একজন জীবিত থাকলেও গুরুতর আহত অবস্থায় ছিলেন।

এ সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, 'ওকে ছেড়ে দাও।' জবাবে আরেকজন বলেন, 'আমি তাঁকে ছেড়ে দিতে চাই না।' এরপর আহত ওই ব্যক্তির শরীরে বেশ কয়েকটি গুলি করা হয়। এতে নিথর হয়ে পড়েন তিনি।রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশের পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে স্থল, আকাশ ও জলপথে ইউক্রেনে হামলা শুরু করেন রাশিয়ার সেনারা। উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে, এমনকি বেলারুশ থেকেও হামলা চালানো শুরু হয়। ধীরে ধীরে রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয় রুশ সেনারা। এরপর থেকেই চলছে দুপক্ষের লড়াই।

Post a Comment

Previous Post Next Post