ইমরানকে হটাতে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোর পরিকল্পনা


ইমরানকে হটাতে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো এক হয়েছিল। শনিবার রাত ২টার দিকে পাকিস্তান মুসলিম লিগের (এন) সদস্য আয়াজ সাদিকের পরিচালনায় অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে ৩৪২ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ১৭৪ জন ভোট দেন। যদিও বিরোধীদের ১৭২ জনের সমর্থন দরকার ছিল।

অনাস্থা ভোট যেন না হয়, সেজন্য অধিবেশন দীর্ঘায়িত করতে সরকারের পরিকল্পনার পালটা কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে শনিবার বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফের চেম্বারে পরামর্শক বৈঠক করেছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। অধিবেশনের বিরতির সময় বৈঠক করেন তারা।

২০১৯ সালে ইমরান খান সরকারের পতন পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

ইমরান খানের প্রতি এই অনাস্থা ভোটের আয়োজনে কাদের ভূমিকা রয়েছে সেটি নিয়ে চলছে আলোচনা। মূলত ইমরানকে হটাতে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো এক হয়েছিল। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে একটি শক্তিশালী জোটও গঠন করেছিল তারা।

২০১৯ সালে ইমরান খান সরকারের পতন পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে দেশজুড়ে লংমার্চ করেছিলেন পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান।সেসময় মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টিসহ প্রায় সব বিরোধী দলই মাওলানার আহ্বানে আজাদি মার্চে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। মূলত তখন থেকেই রাজপথে প্রকাশ্যে ইমরান খান বিরোধী তৎপরতা নজরে আসে।

এছাড়া পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন-র (পিএমএল-এন) বর্তমান প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ,

বিরোধী জোটের সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, জাতীয় সরকারের মতো নতুন ফেডারেল সরকার গঠন করা হবে। এতে আনুপাতিক হারে শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

রাতভর নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষ

নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এর মেয়াদ ছয় মাস অথবা এক বছর রাখার বিষয়টি বর্তমানে বিবেচনায় রয়েছে। এই মেয়াদের মধ্যে নির্বাচনি সংস্কার ও জবাবদিহি-সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলো পাস হতে পারে। সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে নির্বাচন কমিশনকে যৌক্তিক সময় দেওয়া হবে

রাতভর নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে (পার্লামেন্ট) অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। স্পিকারের পদত্যাগের পর তার ভাগ্য নির্ধারণী ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

দুই হাজার আঠারো সালে যদিও তার জনসমর্থন ছিল। একই সাথে তার গোপন খুঁটির জোর ছিল সেনাবাহিনী।

পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্বের বেশিরভাগ সময় ধরেই দেশটির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সেনাবাহিনীর হাতে।ইমরান খানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফকে প্রথমে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। পরে তাকে দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

দুই হাজার আঠারো সালের নির্বাচনী প্রচারণা

অনেকেই সন্দেহ করেন যে মি. শরিফ অতীতে দুর্নীতির সাথে যুক্ত ছিলেন কিন্তু তাকে ওই সময় সাজা দেবার কারণ হিসেবে বলা হয় যে সেনাবাহিনীর সাথে সেসময় তার নিজের সম্পর্কের অবনতি।

রাজনীতিতে মি. শরিফের শুরুটা ছিল একজন সামরিক একনায়কের শিষ্য হিসেবে।

পরেরদিকে সেই সম্পর্ক থেকে স্বাধীন হয়ে উঠেতে থাকেন যার কারণে তিনি সেনাবাহিনীর রোষের মুখে পড়েন।

তিনি সবসময় তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তা অস্বীকার করে এসেছেন।সমালোচকরা ইমরান খানের শাসনকালকে 'হাইব্রিড; সরকার বলে আখ্যা দিয়ে এসেছে।তার প্রতি সেনা সমর্থন নানা উদাহরণ রয়েছে।

দুই হাজার আঠারো সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় যেসব সংবাদসংস্থা তার প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে তাদের অবস্থান সংকুচিত হতে দেখা গেছে।

সেসময় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কিছু প্রার্থীকে প্ররোচিত করে অথবা চাপ প্রয়োগ করে তার দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।

Post a Comment

Previous Post Next Post